ফাঁসানোর জন্য জীবিত মেয়েকে লুকিয়ে রেখে জামাইয়ের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ মেয়ের জামাইকে ফাঁসানোর জন্য জীবিত মেয়েকে লুকিয়ে রেখে জামাইয়ের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা। মেয়েকে ঢাকা থেকে উদ্ধার করলো পিবিআই, নেত্রকোণা জেলা। মিথ্যা মামলা দায়ের করার জন্য বাদীর বিরুদ্ধে মামলা রুজু।
নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া থানাধীন চন্দলাড়া সাকিনের আব্দুল খালেকের মেয়ে তার স্বামী বিদ্যা মিয়ার বাড়ী থেকে গত ১৮/০৪/২০২৪ খ্রিঃ তারিখ নিখোঁজ হয়। পরে ২৩/০৪/২০২৪ খ্রিঃ তারিখে আব্দুল খালেক বিজ্ঞ নারী শিশু ট্রাইব্যুনাল নেত্রকোণায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী/২০২০) এর ৫/১১(ক)/৩০ ধারায় কোর্ট পিটিশন করেন। পিটিশনের অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেন যে বাদীর মেয়ের স্বামী বিদ্যা মিয়া বাদীর মেয়ে ভিকটিমকে অজ্ঞাত স্থানে পাচার করে হত্যা করে গুম করেছে। বিজ্ঞ আদালত পিবিআই, নেত্রকোণা জেলাকে অনুসন্ধানের নির্দেশ প্রদান করলে পিবিআই এর অতিরিক্ত আইজিপি জনাব বনজ কুমার মজুমদারের দিক নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শাহীনুর কবীর তত্ত্বাবধানে এসআই(নিঃ) মোঃ আমিনুজ্জামান উক্ত মোকদ্দমার অনুসন্ধান কার্যক্রম করেন।
অনুসন্ধানে জানা যায় গত ১৭/০৯/২০১৬ বাদী মোঃ আব্দুল খালেকের মেয়ের সাথে বিদ্যা মিয়া, পিতা-আব্দুর রহিম, সাং-দূর্গাপুর, থানা-কেন্দুয়া, জেলা-নেত্রকোণার সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পরবর্তী সময় তাদের পুত্র সন্তান হয়। গত ১৮/০৪/২০২৪ খ্রিঃ তারিখ হতে কথিত ভিকটিমকে তার পিতা বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে রাখে এবং সর্বশেষ ঢাকা জেলাধীন তুরাগ থানার অন্তর্গত জনৈক শহীদুল্লাহ বাসায় গোপন করে রাখে এবং পিবিআই এর অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তাকে ভূল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করতে থাকে। বাদী বারবার কাকুতি মিনতি করে সে তার মেয়েকে তার জামাই কোথাও হত্যা করে লাশ গুম করেছে। তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে ভূল তথ্য দিয়ে বারবার সুপারিশ করে আসামী গ্রেফতারের জন্য চাপ দিতে থাকনে। পিবিআই, নেত্রকোণা জেলা তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে নিশ্চিত হয় যে, উক্ত মোকদ্দমার বাদী আব্দুল খালেক তুরাগ থানাধীন জনৈক শহীদুল্লাহ বাড়ীতে নিজেই রেখে কথিত ভিকটিমের স্বামী বিদ্যা মিয়াকে ফাঁসানোর জন্য এবং পিবিআই, নেত্রকোণা জেলার অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তাকে তার কথা মতো আসামী গ্রেফতারের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। পিবিআই, নেত্রকোণা জেলার অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি চৌকস দল গত ০৯/০৭/২০২৪ খ্রিঃ তারিখ সকালে উক্ত স্থান হতে কথিত ভিকটিমকে উদ্ধার করেন এবং উক্ত বাড়ীর মালিক শহীদুল্লাহ এর স্ত্রী মোছাঃ আলেয়া আক্তার বিজ্ঞ আদালতে এই মর্মে জবানবন্দী প্রদান করেন যে, ভিকটিমের পিতামাতা কথিত ভিকটিমকে তাদের বাড়ীতে রেখে আসে। কথিত ভিকটিমকে উদ্ধার করার পর ভিকটিমের স্বামী বিদ্যা মিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করার জন্য গতকাল ০৯/০৭/২০২৪ খ্রিঃ তারিখে কেন্দুয়া থানায় বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশ মোতাবেক বিদ্যা মিয়ার আর্জির প্রেক্ষিতে তার শ্বশুর, শ্বাশুড়ী ও খালা শ্বাশুড়ীর বিরুদ্ধে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী/২০২০) এর ৭/৩০/১৭ ধারায় মালা রুজু হয়। বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশ মোতাবেক পিবিআই নেত্রকোণা জেলা উক্ত মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে। ভিকটিম উদ্ধারের পর থেকে তার বাবা, মা পলাতক আছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।